ডোবার গভীরতা যেমন খুঁজে লাভ নাই, তেমনি এখানেও। ভারী ভারী লেখা লিখে ক্লান্ত লাগে। এখানে হালকা চালের লেখা লিখে চেপে রাখা শ্বাস ফেলতে পারি। মূলত এই সাইটটা আমার নিজের জন্য এবং অল্প কিছু পছন্দের মানুষদের জন্য। বিচিত্র কারণে যারা আমার দোষ খুঁজে পান না...।
Thursday, 2 September 2010
আমার স্কুল
প্রাইমারিতে পড়ার সময় আমার স্কুল ছিল 'রাধানগর ফ্রি প্রাইমারি স্কুল'।
আমাদের সময় স্কুলটা ছিল একতলা। আমরা প্রাইমারিতে সরকারি স্কুলে পড়েছি কোন সমস্যা হয়নি কিন্তু এখনকার বাচ্চাদের কিন্ডার গার্টেন নামের রোবট বানাবার কারখানায় না-পড়লে পেটের ফাস্টফুড হজম হয় না!
লজ্জার মাথা খেয়ে এও বলতে হয়, আমার সন্তানরাও পড়ে কিন্ডার গার্টেনে। প্রথমদিকে আমার তীব্র আপত্তি ছিল। এখন নাই কারণ আপত্তি করে লাভ নাই। আমার আপত্তির মুখে আমাকে যেটা বলা হতো, তুমি যে লেখাপড়া করেছো এখন এইসবের দাম নাই। নায্য কথা! কারণ আমি কিছুই হতে পারিনি, জজ-ব্যারিস্টার-চাপরাসি।
প্রাইমারিতে পড়াশোনার সময়কার বেশ কিছু স্মৃতি আছে। 'লুড্ডু স্যার' নামে আমার একজন টিচার ছিলেন তাঁর ভাল নাম কালের গর্ভে হারিয়ে গিয়েছিল। তাঁর এই বিচিত্র নামকরণের কারণটাও বিচিত্র। তাঁর নাকি লাড্ডুম গাছের নীচে বাসা তাই এই নাম চালু হয়ে গিয়েছিল। লাড্ডুম থেকে লুড্ডু!
তো, স্যার 'পিটাপিটি'-র জন্য কুখ্যাত ছিলেন, মোটামুটি স্কুলের ত্রাস! তাঁর পছন্দের কিছু হুমকি ছিল, 'পিঠে জালি বেত ভাঙ্গুম, পিঠের চামড়া দিয়া গুড্ডি উড়ামু' ইত্যাদি।
একদিনের কথা। সেদিন তাঁর ক্লাশ নাই কিন্তু শিক্ষকদের বসার রুম থেকে বেরিয়ে এলেন, হাতে জালি বেত। আমাদের ক্লাশে এসে ঘনঘন বেতটাকে বাঁকা করছেন আর মুখে বলছেন, 'তোরার খবর আছে, বুঝলি, হুম, বুঝলি...'।
ঠাস করে বেতটা ভেঙ্গে গেল। তিনি হতভম্ব হয়ে বেতটার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমরা অতি কষ্টে বেদম হাসি চেপে স্যারের ভাঙ্গাচোরা মুখটা উপভোগ করছি।
স্যার অহেতুক কাশি কাশতে কাশতে শিক্ষকদের রুমে অর্ন্তধান হলেন। এবার আমাদের হাসি আটকায় কে!
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
1 comment:
এতো হাসার কিছু নাই। লুড্ডু স্যারের বেতের বাড়ি, ফুইল্লা উঠে তাড়াতাড়ি :( © ডিউক জন
Post a Comment