এখন বিভিন্ন হাবিজাবি কাজে পড়ার সময় কমে গেছে। কিন্তু তিনবেলা খাওয়ার সময়টাতে নিয়ম করে কিছু-না-কিছু পড়া হয়ই! এটা আমার দীর্ঘ দিনের কু-অভ্যাস, প্রতিদিনের রুটিন! এই কারণে মার কম বকুনি খাইনি। ভদ্রমহিলা এই নিয়ে হইচই করে করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। মুরুব্বিদের মধ্যে নানাও ভারী বিরক্ত হন, পারতপক্ষে তাঁর সঙ্গে আমি খেতে বসি না।
তো, খাচ্ছি-পড়ছি, পড়ছি-খাচ্ছি, আমার কোন সমস্যা হয় না। তবে কখনও এমনও হয়েছে তরকারী ঢাকাই রয়ে গেছে, ছুঁয়েও দেখা হয়নি!
জরুরি কাজে একদিনের জন্য বাসার বাইরে ছিলাম। ফিরে এসে সবে খেতে বসেছি, আমার ছ-বছরের মেয়ের চিল চিৎকার, এতো কষ্ট করে আমি, নষ্ট করে দিলে...ইত্যাদি ইত্যাদি।
সর্বনাশ, একি কান্ড! ডাইনিং টেবিলে যে স্বচ্ছ আবরণ দেয়া আছে এই মেয়েটা দেখি এটাকে ক্যানভাস বানিয়ে ফেলেছে! এ আর জায়গা পেল না? তাহলে এখন আমি খাবোটা কোথায়! আমার মেজাজ শরীফ থাকে এটা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি না কারণ মাটিতে বসে খাওয়ার জন্য না, পড়ার ব্যাঘাত হয় বলে।
তখনি মাথায় এটা আসে, মেয়েটা কি একেঁছে তাতে কী আসে যায়! এটা নষ্ট হতে দেয়া চলে না। তাছাড়া টেবিলটাও খাওয়ার উপযোগী করা প্রয়োজন। যত্ম করে এটা তুলে রেখে দেব। এটা মেয়েটার বিয়ের সময় সঙ্গে দিয়ে দেব।
আমি জানি না সময় এই মেয়েটাকে নিয়ে কি খেলা খেলবে কিন্তু এই মেয়েটা বড় হয়ে আমার মত নির্বোধ হলে তখন আকাশ ফাটিয়ে হাউমাউ করে কাঁদবে। অতিরিক্ত চালাক-চতুর হলে ঠোঁট উল্টে বলবে, বাবাটা কেমন কিপটে হয়েছে, ছি!
এটা সময়ই ঠিক করে দেবে...।
No comments:
Post a Comment