Sunday 19 June 2011

বিষ বানানোর কথা

­বেশ ক-দিন ধরেই বাচ্চাদের এবং বাচ্চাদের সাঙ্গোপাঙ্গদের ফিসফাস শুনছিলাম। নিজেদের মধ্যে সবিরাম গুজগুজ! লক্ষ করেছি, এরা নিজেদের মধ্যে কিসব যেন গোপন শলা করছে।
যে কাগজটা নিয়ে এদের চরম গোপনীয়তা তা কেমন কেমন করে যেন আমার হাতে চলে আসে। আমি নিশ্চিত, এটা এরা বুঝতেও পারেনি। হু-হু, আমার বুদ্ধি যে এদের চেয়ে খুব একটা কম না এটা কি এরা জানে না! কাগজটার ফটোকপি করে মূল কাগজটা জায়গায় রেখে দিয়েছি।

এটা বিষ বানাবার গোপন রহস্যটা আমি এখানে দিয়ে ভুল করছি কিনা বুঝতে পারছি না। কোকাকোলা বানাবার রহস্য জনে জনে জেনে গেলে লাভ কী! যদিও ভুলভাল বানানে লেখা কারণ লেখক মহাশয় ক্লাশ ওয়ানে পড়ুয়া!
উপকরণগুলো যতটুকু মনে পড়ছে নষ্ট হয়ে যাওয়া ট্যাবলেট, গাছের বিভিন্ন পাতা, বহু পূর্বে ফেলে দেয়া একটা মেক-আপ বক্স। হাবিজাবি আরও অনেক কিছু। তো, কাগজে যা লেখা ছিল তা এমন:
"বিশ বানানোর কথা
১ নাম্বার: পানি নাও। ডাস্টবিনে ফেলে দেয়া নষ্ট টেবলেট পেলে তাকে হাম্বালদাস্তাতে গোরা করবে।
২ নাম্বার: গুরাগুলি পানির সাথে মিসাও। তারপর মেকআপ বকস বের করে যে পানিতে টেবলেট গুরা করসো সেই পানির ভিতর মেকাপবকস থেকে রং দাও।
৩ নাম্বার: যেই পানিতে মেকআপ বকসের রং দিসো ওই পানিটার মধ্যে তুমি নীল ফালাবে। নীল একটা জিনিস। এটা দিয়ে আমরা কাপড় ধোই। সেটা তুমি আমাদের বাসায় আসলে বুঝবা।
৪ নাম্বার: যেই পানিতে টেবলেট ও রং দিয়েছিলে সেই পানিতে সেম্পু ঢালবে। সেম্পু দিবে যত ইচ্ছা তত।
৫ নাম্বার: সেম্পুটাকে একটা বুতলে ভরে মুখ লাগিয়ে দশ মিনিট ধরে এটাকে ঝাক্কাবে।
৬ নাম্বার: তারপর সাবান নিবে, জালিতে ঘসবে। যে জালি দিয়ে আমরা সাবান ঘসে ঘসে আমাদের শরীর ঘসি। সেই জালি।
৭ নাম্বার: সাবানটার অনেক ফেনা করবে। তারপর এটাকে আরেকটি বুতলে ভরবে। তারপর মেকাপ বকস থেকে যে কোন রং দিতে পার। মেকাপ বকস না থাকলে এইটার জন্য আমার বাসায় আসতে পারো।
৮ নাম্বার: যে পানিতে ফেনা ঢেলেছিলে ওই পানিটা বারবার করে নাড়বে প্রায় ১২ মিনিট নাড়বে।
নাম্বার : সামান্য একটু পেসট দিবে তারপর লারা দিবে।
১০ নাম্বার: সেই গাছের পাতা নিবে যে গাছের পাতায় রস আছে।
১১ নাম্বার: হাম্বলদিস্তা দিয়ে সেই পাতাকে ছেচবে তারপর সেই রসটা সেই বুতলে ঢালবে।
১২ নাম্বার: চামচ দিয়ে যে বুতলে রস ঢেলে ছিলে সেই বুতলের মুখ্খা লাগিয়ে প্রায় ৫ মিনিট ঝাক্কাবে ।


কাগজটায় আর কিছু লেখা নাই। বিষ বানাবার গোপন রহস্যের কি এখানেই সমাপ্তি নাকি... এটা আমার জানা নেই। ঠিক করেছি হাতেনাতে এই মারাত্মক বিষ বানিয়ে নিশ্চিত হবো।

2 comments:

© ডিউক জন said...

নিজের শৈশবের কথা মনে পড়ল। পার্ফিউম তৈরির ঝোঁক চেপেছিল। কয়েকটা গোলাপফুল ভর্তা করে পানিতে চুবিয়ে রেখেছিলাম। সুগন্ধি না হলেও দিন দুই পর দুর্গন্ধ ঠিকই হয়েছিল।

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

একটা শৈশবের সঙ্গে অন্যটা মিলে যায় কেমন করে! আমিও চেষ্টা করেছিলাম গোলাপ থেকে, হা হা হা...© ডিউক জন