Friday 16 September 2011

ছবির পেছনের গল্প

­ছবি সম্বন্ধে আমি তেমন কিছুই বুঝি না। তবুও আমি যে ছবি উঠাবার চেষ্টা করি এটা বলতেও আমার ভারী লাজ! আজকাল ক্যামেরার যেসব নমুনা দেখি...।
এখন অনেককেই দেখি আস্ত কামানসম ক্যামেরা কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়ান। পিঠে প্যারাসুটের মত ব্যাগ। ওই ব্যাগে নাকি ট্রাইপড-ল্যান্সের নামে 'আক্কাড়-পাক্কাড়' হেন জিনিস বাদ নাই। অনুমান করি, ওই ব্যাগ থেকে জ্যান্ত পাইথন বের হওয়াও বিচিত্র কিছু না।
এই সব কামানের দাম নাকি লাখের নীচে না। এই কামান নিয়ে ঘুরে বেড়ানো, এটাই নাকি এখনকার 'এস্টাইল'! এমন দুজন নামকরা কামানওয়ালাকে আমি চিনি (নাম বলে লজ্জা দিতে চাচ্ছি না) যারা এক বইমেলায় আমার এবং আমার 'ইস্তারি সাহেবার' ফটো 'খিঁচিয়ে' ছিলেন। আফসোস, ওই ফটো নাকি জনসমক্ষে বের করা বিপদজনক স্থির করে আর আলোর মুখ দেখেনি।

নিরুপায় আমার ভরসা থ্রি পয়েন্ট টু মেগাপিক্সেলের সেল-ক্যামেরা। কারণ, থাক...। আমি বিলক্ষণ জানি, এই জিনিসটা ক্যামেরা সমাজে শূদ্র টাইপেরও না, আরও নীচু জাতের। মেথর শ্রেণীর। কী আর করা!
শ্লা, কাছের লোকজনও বিচিত্র। এরা রসিক আছে। বৈদেশি লোকজনেরা হাবিজাবি জিনিসপত্তর নিয়ে আসেন। কেন রে বাপু, ভাল একটা ক্যামেরা নিয়ে আসলে কী আমি 'নাগ' করব! বৈদেশ থেকে ক-দিন আগে আমার জন্য একজন নিয়ে এলেন জাঁকালো এক ব্লেজার। তাঁর কেমন কেমন করে যেন একটা ধারণা জন্মেছে আমি ব্লেজার গায়ে দেয়ার জন্য ছোঁক ছোঁক করে বেড়াচ্ছি...। ব্লেজার গায়ে না-দিলে আমার চলেই না। আমি ব্লেজার গায়ে না-দিলে শীত পগারপার হবে!...।

ইঞ্জিনের নৌকায় থেকে ছবি উঠাবার সময় আজ পা হারাতে বসেছিলাম। মাঝি নামের মানুষটার সতর্কতায় এই যাত্রায় আমার আর পদত্যাগ করতে হলো না। নইলে বেচারা আমি, আবুল থেকে হাবুল হয়ে যেতাম! মাঝি, ওই সহৃদয় মানুষটার নাম জানা হলো না। আমার ছবি উঠাবার সাবজেক্ট হিসাবে সাপ-ব্যাঙ-গরু-ছাগল কিছুই বাদ গেল না, বাদ গেলেন কেবল এই মানুষটা! কী এক চুতিয়া টাইপের মানুষ আমি!

যাই হোক...। আমি যখন তিতাস নদীর ছবি উঠাচ্ছিলাম [১]... কখন যে আমি অন্যের ক্যামেরায় ধরা পড়েছি...

*ছবি ঋণ: বিশ্বজিত পাল বাবু

সহায়ক সূত্র:
১. তিতাস নদী: http://www.ali-mahmed.com/2012/01/blog-post_07.html