Sunday 30 January 2011

প্রকৃতি এবং তার সন্তানেরা

গেছি দাঁতের সমস্যা নিয়ে। যার কাছে গেছি সেই মানুষটা রসিকলাল টাইপের। মুখ তুলে বললেন, কার দাঁত দেখাবেন, আপনার না প্রজাপতির?
তখনও বুঝিনি। কিন্তু মানুষটার হাতে নিমিষেই ক্যামেরা ঝলসে উঠে। একটা প্রজাপতি দেখি দিব্যি আমার কাঁধে বসে আছে!

Saturday 29 January 2011

চোখের ওষুধ

শীত আমার পছন্দের ঋতু না কিন্তু শীতে চারদিক ফুলে ফুলে ছেয়ে থাকে, শীতের ফুল। শীতের সকালটাই অন্য রকম। এর সঙ্গে যদি যোগ হয় চোখ খোলার সঙ্গে সঙ্গে পর্দা সরাতেই অজস্র ফুল তাহলে এ গ্রহের মালিন্য কাউকে স্পর্শ করে কেমন করে!

Thursday 27 January 2011

মাটির কাছাকাছি

গায়ে রোদ লাগাবার জন্য এই জায়গাটায় বেশ রোদ থাকে, শীতের। জায়গাটাও পছন্দের, কিছু শাক-সব্জীর গাছ লাগানো হয়েছে এখানটায়। এখানেই বসে বসে দেখি লাউয়ের ডগা কেমন ঘন্টায় ঘন্টায় বেড়ে উঠে। কেমন করে ঝাপিয়ে টমেটো, সীম গাছে ফুল আসে।
একটা বসার জায়গা করলে বসে বেশ আরাম করা যেত। কাঠাল গাছটার নীচে একটা ইয়া বড় পাথর এনে রাখতে গেলে আমার মেয়েটার তীব্র আপত্তি। এই পাথরে বসলে এবং গাছে হেলান দিলে নাকি গায়ে ময়লা লাগবে! এটা জটিল কোন সমস্যা না, দু বালতি পানি ঢেলে দিলেই হয়।

এখন ভালই হলো, পা ছড়িয়ে রোদ পোহাতে পোহাতে বই-টই পড়া যাবে। কিন্তু জায়গাটা প্রায়ই বেদখল হয়ে যায়। আমার খানিকটা ঈর্ষা হয়, এ শৈশবেই মাটির কাছাকাছি থাকতে পারছে যে সুযোগটা আমার ছিল না! 

Monday 24 January 2011

শিরোনামহীন

শীতের তখনও নামগন্ধও নেই, একজন ফোনে বললেন, কুরিয়ারে আপনার এখানে ১০০টা কম্বল পাঠিয়ে দিচ্ছি। আমি বিরস মুখে বললাম, আচ্ছা।
বুকে হাত দিয়ে বলি বিরক্তি লুকাতে পারিনি, কারণ আছে। এই মানুষটা আমাকে কম্বল গছিয়ে পগার পার হবেন, লম্বা সময়ের জন্য তিনি দেশের বাইরে যাবেন। পুরো ঝামেলাটা যাবে আমার উপর দিয়ে। অতীতে আমি দেখেছি কারও সহায়তা পাওয়া যায় না, একা আমার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। তাছাড়া কাজে-অকাজে আমার সময় কোথায়? তার উপর আছে আমার ছাতাফাতা লেখালেখি।

কিন্তু এবার খানিকটা অন্য রকম হয়, আমার প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন একজন ডাক্তার, দু-চারজন অন্য মানুষও। আমার কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। আমরা গেরিলা পদ্ধতি অবলম্বন করতাম- হিট এন্ড রান। পিঠে বোঁচকা নিয়ে, ঠিক যার প্রয়োজন তাকে দিয়েই লম্বা-লম্বা পা ফেলে চট সরে পড়া। বিচিত্রসব অভিজ্ঞতা। জন্মের শিশুকে মা যখন কম্বল দিয়ে ঢেকে দিতেন এই দৃশ্য আমি কখনও ভুলব না। ঈশ্বর, আমার মস্তিষ্ক যেন কখনও এই স্মৃতি বিস্মৃত না হয়।
আমি কাজে-অকাজে প্রচুর ছবি তুলি কিন্তু কেন যেন এমন মুহূর্তের ছবি উঠাতে ইচ্ছা করত না কারণ আমার কাছে মনে হতো, এমন দৃশ্য ক্যামেরায় আটকে ফেলা...। এটা আমাদের সেলিব্রেটিদেরই মানায়, এদের সঙ্গে পোজ দিয়ে ছবি উঠানো এবং আমাদের মিডিয়া, 'জারে মুই একটা কম্বল পাইনু', ইত্যাদি।

তো, কম্বলের সঙ্গে যোগ হলো দুই গাঁইট (প্রায় ৪০০) পুরনো কাপড়। ওয়াল্লা, এতো শস্তা পুরনো কাপড়! গাঁইট কিনলে গড়ে একটা কাপড় ২০ টাকা পড়ে! কম্বলের ব্যাপক চাহিদা, পরে আরও কিছু কম্বল কেনা হলো, এক সময় তাও ফুরিয়ে গেল।
কিন্তু একটা বিষয় আমি বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করলাম, শেষের দিকে এখানে দেওয়ার মত আর লোক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ডাক্তার মানুষটা রসিক আছেন। একদিন বলছেন, আমরা বড়ো অভাগা, লোক খুঁজে পাচ্ছি না!
আহা, এমন অভাগা হওয়াও সুখের...।

Saturday 22 January 2011

সময়ের চেয়ে পাজি আর কেউ নাই!

একদিন দেখি এ বাড়ির সামনে সাঁই সাঁই করে সাইকেল চালাচ্ছে। মেয়েটার দেখি সাইকেল চালাবার বড়ো শখ! কিনে দেয়ার কথা বলেছিল কিন্তু সময়ে অনেক কথা ফিযুল মনে হয়।
একজনের কাছে এটা পড়ে ছিল, মেয়েটা চালাবার জন্য নিয়ে এসেছে। যার কাছে পড়ে ছিল তার খুবই দ্রুত মনে পড়ে এই সাইকেলটা এমন পড়ে থাকতে দেয়া যায় না অতএব ফেরত নিয়ে আসা আবশ্যক।

Monday 17 January 2011

৬৪ গুটি প্রতিযোগিতা

৬৪ গুটি নিয়ে লেখাটায় বলেছিলাম, একটা প্রতিযোগিতা লাগিয়ে দিলে মন্দ হয় না [১]। কাজটা যতটা সোজা মনে হয়েছিল বাস্তবে ততটা না। কারণ এঁদের সঙ্গে মনের যোগাযোগটা কঠিন- এঁরা চট করে আমাদের মত দু-পাতা পড়ুয়াদের বিশ্বাস করতে চান না। এই দায়টা আমাদেরই!

যাই হোক, লেগে থেকে কাজ হয়। ক্রমশ এঁরা আমাকে এঁদের একজন ভাবতে শুরু করেন। প্রতিযোগিতা শুরু হয়। গাজি নামের একজন মানুষ এই প্রতিযোগিতায় সবাইকে কচুকাটা করে ছাপিয়ে উঠেন। একজন ডাক্তারের হাত থেকে যখন পুরস্কার গ্রহন করেন তখন তাঁর আনন্দ দেখে কে!
 

সহায়ক সূত্র:
১. ৬৪ গুটি: http://chobiblog.blogspot.com/2011/01/blog-post_13.html

Thursday 13 January 2011

৬৪ গুটি

আজকাল এমন দৃশ্য খুব একটা চোখে পড়ে না! খেলাটার নাম '৬৪ গুটি'। মেঝেতে ঘর এঁকে নিলেই হয় আর রেললাইন থেকে ৬৪টা পাথর।
প্রায়ই দেখি এরা নিমগ্ন হয়ে খেলাটা খেলতে থাকেন। খেলেন দু-জন কিন্তু অনেকে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখেন। আমাদের দেশ থেকে খেলা বিষয়টা ক্রমশ কমে যাচ্ছে। এটা আমার ধারণা, অপরাধ-অস্থিরতার পেছনে এই খেলাগুলো কমে যাওয়াও অন্যতম একটা কারণ।

ভাবছি এই খেলা নিয়ে একটা প্রতিযোগিতা লাগিয়ে দিলে কেমন হয়?

Tuesday 4 January 2011

রকেটের মত এই জিনিসটায় আছে কী, তবুও

একটা লাগালেই হয় কিন্তু এবার বেশ কটা লাউ গাছ লাগাতে হয়েছে। এর কারণ আছে। গত বছর যে গাছটা আগ্রহ করে লাগিয়েছিলাম সেটা একটা বাচ্চা ভেঙ্গে ফেলেছিল। আমার নিজের বাচ্চা হলে ঠাস করে চড় দিতাম। কানে কানে বলি, আমি সেই সব চুতিয়া সেলিব্রেটিদের ধারে কাছেও নাই যারা ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় আলাদা গাম্ভীর্য এনে ন্যাকা ন্যাকা গলায় বলেন, "আমি কখনও কোন শিশুর গায়ে হাত তুলিনি, আপনারাও তুলবেন না"।
ওই বাচ্চাটাকে চড় দিতে না-পারার কারণ এই সব কিছু না। আমি যতো জালিমই হই না কেন এই নাম না-জানা বাচ্চাটার [১] গায়ে হাত তোলা যায় না। তো, গত বছর ওই লাউ গাছটা যখন তরতর করে বেড়ে উঠছিল ঠিক তখনই ওই বাচ্চাটা গাছটা ভেঙ্গে ফেলায় গাছটার একেবারে দফারফা হয়ে গিয়েছিল। তাই এবার বুদ্ধি করে বেশ কটা লাগিয়েছি। এবার ছাড়াছাড়ি নাই- লাউয়ের আগা খাব, ডুগাও... :)


সহায়ক সূত্র:
১. নাম না জানা বাচ্চাটা: http://www.ali-mahmed.com/2010/02/game-of-light-and-darkness_09.html

Monday 3 January 2011

মাটির গন্ধ ছড়িয়ে পড়ুক

আমার পুত্রধন সম্ভবত আমাকে দেখে দেখে এবার মাটিতে কিছু লাল শাকের বীজ ফেলেছিল। সেই বীজ থেকে কচি কচি চারা গজিয়েছিল। আজ সেই চারার গাছগুলো ও সংগ্রহ করেছে। দুপুরে লাল শাক রান্না হবে। ওর উচ্ছ্বাস দেখে আমি নরোম গলায় বলি, বেটা, সবাই মাটি থেকে গাছ বের করতে পারে না।
তার সরল প্রশ্ন, কেন?
আমি বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করি। কতটা বুঝল কে জানে! সবটা না-বুঝলেও সবাই যে পারে না এটা বুঝলেই ঢের।